এনায়েত খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : পদত্যাগ করা সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়াকে বহিস্কার করলো বিএনপি। রবিবার রাতে দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়। এমরান সালেহ প্রিন্স জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য ও শৃংখলাবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে অব্যাহতিপূর্বক বহিস্কার করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আব্দুস সাত্তারকে দল থেকে বহিস্কারের বিষয়টি কেন্দ্র থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। দলের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণেই দল থেকে তাকে বহিস্কার হয়েছে। তার কোনো আদর্শ নেই, তিনি নষ্ট হয়ে গেছেন।’
আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়া পাঁচবারের সংসদ সদস্য। একবার নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। সর্বশেষ নির্বাচনে সারা দেশে যখন বিএনপির ভরাডুবি তখনো তিনি জয়লাভ করেন। তবে দলীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করেন সংসদ থেকে। ক্ষোভে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।
এরপরই শুরু হয় নানা গুঞ্জন। তিনি ভোটের মাঠে লড়তেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আলোচনা চলতে থাকে। স্বতন্ত্র নাকি অন্য কোনো দলের হয়ে তিনি লড়বেন এ নিয়েও চলে আলোচনা। যদিও তিনি ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছে। রবিবার বিকেলে সাদ মোহাম্মদ রশিদ নামে এক ব্যক্তি জেলা নির্বাচন অফিস থেকে আব্দুস সাত্তারের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া দলীয় সিদ্ধান্তের আলোকে গত ১১ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন। গত ২৯ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করার চিঠি জমা দেন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।
২০ বারের বেশি কল দেওয়ার পর আব্দুস সাত্তারের ফোন রিসিভ করা তাঁর ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার রবিবার রাতে বলেন, ‘দলের সঙ্গে দূরত্বের কারণে বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। নির্বাচন কেন্দ্রিক অনেক ফোন আসছে বলে রিসিভ করাও সম্ভব হচ্ছে না।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার এক আত্মীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তবে আমার বাবা নির্বাচন করবেন কি-না এ বিষয়ে পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে যদি নির্বাচন করেন তাহলে স্বতন্ত্র থেকে করবেন। ওনি কোনো দলে যোগ দেননি।’
জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছেন, আব্দুস সাত্তারের পদত্যাগে দলের কোনো ক্ষতি হবে না। আব্দুস সাত্তার দীর্ঘদিন ধরেই দলের কর্মকাণ্ডে নেই। পদত্যাগ বিষয়েও তিনি কারো সঙ্গে পরামর্শ করেননি। সরকারের সহযোগিতা নিয়ে তিনি ভোটের মাঠে তিনি পার পেতেন পারেন বলেও এক নেতা মন্তব্য করেন।
Leave a Reply