নোয়াখালীর সুবর্ণচরে সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মাকে ৫ টুকরা করে হত্যার ঘটনায় সন্তান হুমায়ুন কবির হুমুসহ (২৭) সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এই আদেশ দেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এটি একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড। যে মা সন্তানকে জন্ম দিলেন সেই সন্তান কীভাবে মাকে হত্যা করে। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। আশা করি উচ্চ আদালতেও এই রায় বহাল থাকবে।
হুমায়ুন কবির হুমু ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিরব (২৬), নুর ইসলাম (৩২), কালাম (৩০), সুমন (৩৩), হামিদ (২৮) ও ইসমাইল (৩০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মা নূরজাহান বেগমকে (৫৭) সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বালিশচাপা দিয়ে মেরে ৫ টুকরা করে নিজ সন্তানসহ কয়েকজনের একটি দল। পরে চরজব্বার ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের একটি ধানখেতে পুতে রাখে। পরে এলাকাবাসী মরদেহের একটি অংশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চরজব্বার থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইব্রাহীম এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাদীর সম্পৃক্ততা পেলে বাদী হুমায়ুন কবিরসহ ৭ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাত আসামির উপস্থিতিতে আজ এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম খলিল বলেন, নূরজাহান বেগমের প্রথম ঘরের সন্তান বেলাল মারা যাওয়ার আগে ৪ লাখ টাকা ঋণ নেন। সেই ঋণ পরিশোধের জন্য নূরজাহান বেগম সম্পদ বিক্রি করতে চাইলে পরের ঘরের হুমায়ুন বাধা দেন। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী মাকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার পর মরদেহ ৫ টুকরা করে ধানখেতে পুতে রাখে।
হুমায়ুন নিজেই তার মাকে হত্যার ঘটনায় প্রথম মামলা করেন। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে হুমায়ুনের সম্পৃক্ততা পেয়ে তাকেসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। মামলায় ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং ৫ জন আসামি স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।অনলাইন ডেস্ক
Leave a Reply