এবার থাপ্পড় মেরে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীর কান ফাটানো এবং একইসাথে ক্লাসের সকল শিক্ষার্থীদের মারপিটের অভিযোগ উঠেছে যশোরের চৌগাছার মালিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।
অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২৯জানুয়ারী) যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের মালিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পাশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময় মারপিট ও অশোভন আচরণ করা এমনকি অভিভাবকদের সাথে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। রোববার শ্রেণি কক্ষের বাইরে যাওয়ায় ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর কানে তিনি থাপড়ান ও অশ্লীল গালিগালাজ করেন। ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুলের পাশের বাজারে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এসময় অন্য শিক্ষার্থীরা কেন শ্রেণিকক্ষের বাইরে গেলো এই অভিযোগ তুলে সকল শিক্ষার্থীকে তিনি মারপিট করেন। পরে অভিভাবকরা আমার কাছে এসে অভিযোগ করলে আমি মোবাইল ফোনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে (টিও) জানাই। এরপর তিনি স্কুলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রধান শিক্ষক তার স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথেও খারাপ আচরণ করেন। নারী সহকর্মীদের সাথে বিভিন্ন সময় তিনি অশোভন আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। এরআগে এক নারী সহকর্মীকে কু-প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। সেসময় আর এমন করবেন না বলে তিনি ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রোববার স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের বাইরে বের হওয়ায় কোন কারন ছাড়াই ওই শিক্ষার্থীর কানে থাপ্পড় মারেন প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান। শিক্ষার্থী গুরুতর অসুুস্থ হয়ে পড়লে পাশের মালিগাতি বাজারে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে বের হলে প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান সকল শিক্ষার্থীকেই বেধড়ক মারপিট করেন। পরে অভিভাবকরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বিষয়টি মোবাইল ফোনে আমাকে অবহিত করেন। অভিযোগ পেয়ে একজন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে ওই বিদ্যালয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। বিদ্যালয়ে ওই শিক্ষার্থী জানায়, ‘সে কানে আগের চেয়ে কম শুনছে’। অন্য শিক্ষার্থীরাও তাদের মারপিটের বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়। প্রধান শিক্ষকও বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে জানানো হলে তিনি এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। নির্দেশনার আলোকে সোমবার দুপুরে লিখিতভাবে প্রতিবেদন আকারে বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।সংগ্রহ
Leave a Reply