সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে কুমিল্লায় মরদেহ সামনে রেখে সৎ মা ও মেয়ের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে মরদেহ প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রাখেন জামাতা।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে নগরীর হাউজিং এস্টেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বিষ্ণু কুমার রায়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা পর জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।
হাউজিং এস্টেট এলাকার বাসিন্দা মৃত ওই ব্যক্তির নাম সিরাজুল হক। তিনি পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তার মরদেহ সামনে রেখে প্রথম পক্ষের মেয়ে ও দ্বিতীয় স্ত্রীর মধ্যে এই ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। সম্পত্তির জন্য মরদেহ আটকে রাখার ঘটনায় এরই মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো নগরীতে।
স্থানীয়রা জানায়, ডা. সিরাজুল হক মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মারা যান। খবরে পেয়ে তার একমাত্র মেয়ে ও মেয়ের জামাতাসহ স্বজনরা বাসায় আসেন। দাফনের সময় নির্ধারণ করা হয় বিকেল ৪টায়। কিন্তু সম্পত্তি নিয়ে মেয়ে ও সৎ মায়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় প্রায় এক ঘণ্টা পর বিকেল ৫টায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
মৃত সিরাজুল হকের মেয়ে হাছনেয়ারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার যখন বয়স ১২ বছর তখন মা মারা যান। ১৫ বছর বয়সে আমার বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামীর বাড়ি চলে যাই। বাবা ঘরে একা, তাই দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ওই সংসারে কোনো সন্তান হয়নি। গত ২০ বছর ধরে বাবা অসুস্থ ছিলেন। চারবার স্ট্রোক করেছেন। তখন আমার সৎ মা সেতারা বেগম তার ভাই জাহাঙ্গীর ও তারেক হাউজিং এস্টেটের জমির টিপসই নেয়। আমি হাউজিং বা গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের রাচিয়ায় কোনো সম্পত্তি পাইনি। আমিই আমার বাবার একমাত্র মেয়ে।
মেয়ের জামাতা ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শ্বশুরের লাশ দেখতে গেলে তারা আমার মেয়ের ব্যাগ আটকে রাখে। নানার ঘর থেকে তাকে বের হতে বলে। আমার স্ত্রীকে মারধর করে। তখন একটু ধস্তাধস্তি হয়। তারা কৌশলে প্রতারণা করে ২০১৮ সালে আমার শ্বশুরের ৮ শতক জমি, তিনতলা ভবনসহ হেবা দলিল করে নিয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে মৃতের দ্বিতীয় স্ত্রী সেতারা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বামীর মৃত্যুতে শোকাহত বলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বিষ্ণু কুমার রায় বলেন, লাশ দাফনে বাধার খবর পেয়ে আমরা হাউজিং ১ নম্বর সেক্টরে মসজিদে যাই। পরে উভয় পক্ষকে বলেছি, লাশ যেন আটকে রাখা না হয়। মোটামুটি ঘণ্টাখানেক পর জানাজা ও দাফন হয়। দুই পক্ষকে নিয়ে বসে পরবর্তীতে ঘটনাটি সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। সূত্র: কালেরকণ্ঠ
Leave a Reply