হাতকড়া নিয়ে পালিয়েছে মাসুদ রানা নামের মাদক মামলার এক আসামি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশ মাসুদকে নিয়ে মাদক উদ্ধার অভিযানে গেলে এ ঘটনা ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত মাসুদকে গ্রেফতার অথবা হাতকড়া উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ধারণা, হাতকড়া নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে মাসুদ। মাসুদ রানা সদর উপজেলার আলাতুলি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কোদালকাটি জেলাপাড়ার নাজিবুলের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার একটি মাদক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মাসুদ রানাকে আটক করে বিজিবি পোলাডাঙ্গা ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে পুলিশ তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃত আসামির মোবাইলে অনেক হেরোইনের ছবি দেখা যায়। রাতে তাকে সঙ্গে নিয়ে দুর্গম চরাঞ্চল সদর উপজেলার
আলাতুলি ইউনিয়নের কোদালকাটি এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। সেখানে স্কুলপাড়ার একটি পাঠখড়ির মাচা থেকে ১ কেজি ৮২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে। সে সময় মাসুদের দুই হাতে একটি হ্যান্ডকাফ লাগানো ছিল।
পুলিশের দাবি, ফেরার পথে ভোর ৫টার দিকে জেলেপাড়ার একটি লিচু বাগানে কাদার মধ্যে পা পিছলে পড়ে যায়। এই সুযোগে পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে মাসুদ হ্যান্ডকাফ নিয়েই দৌড়ে অন্ধকারের মধ্যে লুকিয়ে যায়।
এরপর পুলিশ পিছু নিলেও তাকে ধরতে পারেনি। অভিযানে ছিলেন এসআই মাহবুবুর রহমান, এসআই জালাল উদ্দীন, এসআই নাসির উদ্দীন, এএসআই নয়ন কৃষ্ণ হোড়, এএসআই আব্দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
ঘটনার পরপরই পুলিশ তার সন্ধানে অভিযানে নামে। কিন্তু গত তিন দিনেও তাকে
গ্রেফতার করেত পারেনি পুলিশ। ওই আসামি এখন পর্যন্ত নিরুদ্দেশ। পুলিশের ধারণা সে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আসামি মাসুদ রানার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল।
তার বাবা নাজিবুল ইসলামও মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি এখন ভারতে পালিয়ে আছেন। তার আপন ছোট ভাই ও খালাতো ভাই সবাই মাদক কারবারে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মাসুদকে ধরতে না পেরে পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আলাতুলি ইউনিয়নের দুই ইউপি সদস্য ও আলাতুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতাসহ অন্তত ৪- ৫ জনকে
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও গোদাগাড়ি থানা পুলিশের যৌথ পুলিশ দল দুই জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় একাধিক অভিযান চালায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, মাসুদ রানার বিরুদ্ধে তিনটি মাদক মামলা রয়েছে। তাকে নিয়ে মাদকের সন্ধানে দুর্গম পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় আমরা তার দেখানো স্থান থেকে এক কেজি ৮২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করি। কিন্তু প্রচুর বৃষ্টিপাত ও বজ পাতের সুযোগে সে আমাদের পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগে সে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায়। এবিষয়ে কনো পুলিশ সদস্য ক্লোজড হওয়ার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নি তিনি।
Leave a Reply