কক্সবাজার শহরের কুতুবদিয়া পাড়া ও খুরুশকুলে পৃথক দুইটি হত্যাকান্ডের রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পৃথক সময়ে এই দুই হত্যাকান্ড হয় পরিকল্পিতভাবে। পরকীয়া প্রেম ও প্রেমিকা ভাগিয়ে নেওয়ার জের ধরে দুই হত্যার ঘটনা ঘটে বলে জানান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার। পৃথক ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়-নান্নুর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক এক কিশোরীর সাথে। নান্নু খারাপ ছেলে, ইয়াবা-গাঁজাসহ মাদক সেবন করে বলে ভুল বুঝিয়ে প্রেমিকা এবং নান্নুর মধ্যে ফাটল ধরায় এবাদুল্লাহ। পরে ওই কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবাদুল্লাহ।
এসব জানার পর নান্নু, সালাউদ্দিন, রাকিব মিলে এবাদুল্লাহকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে কক্সবাজার শহরের পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার সমুদ্রের পাড়ে ঝাউবাগানে আসতে বলে এবাদুল্লাকে। এরপর পকেট থেকে মোবাইল বের করে এবাদুল্লার প্রেমের বিভিন্ন এসএমএস, কল রেকর্ড নান্নুর প্রেমিকা এবং এবাদুল্লার এক সাথে তোলা ছবি দেখতে পায় নান্নু। তখন নান্নু ক্ষুব্ধ এবং উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
এই প্রেম ভালবাসা-ই কাল হলো এবাদুল্লাহর জীবনে। ভালবাসাকে কেন্দ্র করে এবাদুল্লাহকে তিনজন মিলে নৃশংসভাবে হত্যা করে। প্রথমে তিনজনে রশি পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পরে ১১ টি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবাদুল্লাহর।
পরদিন গত শুক্রবার ঝাউবাগানের বালিতে পড়ে থাকা এবাদুল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দুদিন পর এই ঘটনার মুলহোতা রাকিবকে গ্রেপ্তার করে সোমবার (২৬ জুন) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
আসামি রাকিবকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার জানান, অপরাধ করে কেউ রেহাই পাবে না। আসামি রাকিবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং অন্যান্য আসামিদের ধরতে তৎপরতা চলমান আছে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এবাদুল্লাহ (১৫) কক্সবাজার শহরের একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র।
অন্যদিকে শাকের ও পারভীনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে দীর্ঘ দিনের। এক পর্যায়ে পারভীনের সাথে বিয়ে হয় কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর আব্দুল আজিজের।
পরে শাকের তার চাচাতো ভাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জাকিরের সাথে যোগাযোগ করে আব্দুল আজিজকে হত্যার ছক আঁকে।
ছক অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল আজিজের অটোরিকশা নিয়ে শাকের ও জাকির খুরুশকুলের কৃস্টের দোকানের সামনে থেকে আশ্রয়ন প্রকল্পের দিকে যায়। কিছু দূর যাওয়ার পর জনশূন্য স্থান পেয়ে জাকির ও শাকের ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে আজিজকে।
এঘটনার রহস্য উদঘাটনের পর সোমবার (২৬ জুন) এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
এঘটনায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাকির ও শাকেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এঘটনায় আরো কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Leave a Reply