বরগুনার তালতলী উপজেলার তালুকদারপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বৃষ্টি হলেই টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয়। টিনের চালা দিয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতে ধীরে ধীরে শ্রেণিকক্ষ ভরে যায়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে আসা ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
বিদ্যালয়টি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালে ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা টিনসেট ভবন নির্মাণ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এরমধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন। এ সময় পুরাতন আধাপাকা জরাজীর্ণ টিনসেড ভবনের ষষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে দেখা যায়, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মাথায় ছাতা দিয়ে বসে ক্লাস করছেন। পুরাতন টিনের চালা দিয়ে অনবরত বৃষ্টির পানি শ্রেণিকক্ষে পড়ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই শ্রেণিকক্ষগুলো বৃষ্টির পানিতে ভরে যায়। একই অবস্থা অন্যান্য শ্রেণিকক্ষগুলোতেও।
ষষ্ঠ শ্রেণির নাঈম, রোমান, আরাফাত ও সোহাগীসহ অনেক শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের বিদ্যালয়ের টিনের চাল ফুটো থাকার কারণে শ্রেণি কক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ায় আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হয়। ছাতা মাথায় দেওয়ার পড়েও পানি পড়ে আমাদের বই খাতা ও পোশাক ভিজে যায়। এরপরও আমরা বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করছি।
সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়টিতে ঝড় বৃষ্টির ও জরাজীর্ণ পুরাতন শ্রেণিকক্ষের মধ্যে আমাদের পাঠদান নিতে হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে অনেকটা বাধ্য হয়েই আমাদের ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ে নতুন একটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় কর্তৃপক্ষ পুরাতন ভবনটির মেরামত বা সংস্কার করতে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। আর ঠিকাদারও কাজ ফেলে রেখেছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মল্লিকা রত্না বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনের চালা দিয়ে পানি পড়ায় আমরা বৃষ্টিতে কক্ষের মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়ের পুরাতন আধাপাকা টিনশেড ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। গত তিন চার বছর থেকে ভবনটির বেহাল অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ক্লাসের ভেতর জমা হয়ে যায়। তখন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ছাতা মাথায় দিয়ে বসে ক্লাস করতে হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎফুল কবির মো. কামরুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, বিদ্যালয়টির একটি নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলমান। যতদ্রুত সম্ভব নির্মাণকাজ শেষ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আর জরাজীর্ণ ও আধা সেমিপাকা টিনশেড ভবনের কক্ষগুলো দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply