প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের যমুনা পূর্ব পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। আর এই যমুনার ভাঙনে ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলের জমি হারিয়ে শত শত পরিবার নিঃস্ব হয়ে রাস্তার পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে জিওব্যাগ ফেলা সহ দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করে আসছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা।
হঠাৎ করে গত কয়েকদিন ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূঞাপুরের যমুনা পূর্ব পাড়ের পাটিতাপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধ শতাধিক ঘরবাড়ি, ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের অর্ধেক জায়গা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জিওব্যাগ না ফেললে শত শত বসতভিটা সহ ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত (২৪ আগষ্ট) ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষেরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলেও এখন পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা না-হওয়ায় হতাশ ভাঙন কবলিত এলাকাবাসী।
পাটিতাপাড়া ভাঙন কবলিত এলাকার নাসির উদ্দিন, সেকাম শেখ, সিরাজুল ইসলাম, সজল সহ অনেকে বলেন- যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে আমাদের এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েকদিনে অনেক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের প্রায় ৫০ বছর আগেকার কবরস্থান ও ঈদগাহ মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙন ঠেকাতে কোন কাজ না করার প্রতিদিন ঘরবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা কয়েকদিন আগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদের আশ্বাস দিলে আমরা অবরোধ তুলে নেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোছাঃ নার্গীস বেগম বলেন- আমাদের উপজেলাটি যমুনা তীরবর্তী একটি উপজেলা। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে যমুনার পূর্ব পাড়ের বেশ কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। এবছর চিতুলিয়াপাড়া, মাটিকাটা এবং পাটিতাপাড়ার কিছু অংশে ভাঙন শুরু হয়েছিল।
আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করলে তারা ভাঙন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বর্তমানে পাটিতাপাড়া ভাঙনের বিষয়ে ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন- কিছুদিন আগে আমরা যমুনা পূর্ব পাড়ে ভাঙন রোধে কয়েক দফায় জিওব্যাগ ফেলেছি। স্থায়ী বাঁধের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন দিয়েছি। অনুমতি পেলে স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু করা হবে।
Leave a Reply