ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় চর নাটুয়ার পাড়া হাটে আসতে শুরু করেন পাটচাষী ও ব্যবসায়ীরা। সাতসকালেই জমে ওঠে পাটের হাট। এই হাটের বিশেষত্ব হলো এটি ভাসমান হাট। নৌকার ওপরেই চলে বেচাকেনা।
শনি ও বুধবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠে চর নাটুয়ার এই হাট।
স্থানীয় পাট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে প্রতি হাটে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার পাট কেনাবেচা হয়। বর্তমানে প্রতি মণ পাটের মূল্য প্রায় ২ হাজার ৬শ টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬,৮৪০ হেক্টর জমিতে। চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ১২,৩৬৪ হেক্টর জমিতে। পাটের ভালো দাম থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ফলে জমে উঠেছে ভাসমান এই পাটের হাট।
হাট কমিটির সদস্য আব্দুর রহিম জানান, ভোরের আলো ফোটার পরেই জেলার কাজীপুর, জামালপুরের সরিষাবাড়ি, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, ধুনট, শেরপুর, টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাট কিনতে আসেন ব্যাপারীরা। কেনাবেচা এবং আসা-যাওয়া সহজ হওয়ায় এই হাটের কদর ক্রমেই বাড়ছে।
সরিষাবাড়ি উপজেলার পাটব্যবসায়ী তাহের আলী জানান, পাট কিনে এক নৌকা থেকে অন্য নৌকায় তোলা সহজ হয়। যোগাযোগ সুবিধা ও পরিবহন খরচ কম হওয়ার কারণে প্রতি হাটে তিনি ৫০ থেকে ৬০ মণ পাট এখান থেকে ক্রয় করেন।
ভুয়াপুরের সোলেমান ব্যাপারি বলেন, অন্য হাট থেকে পাট কিনে নৌকায় তোলা অসুবিধা হয়। তাই এই হাট থেকে পাট কিনি। তিনি প্রতি হাটে ৬০-৭০ মণ পাট কেনেন বলে জানান।
হাট ইজারাদার ও নাটুয়ারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতি হাটে প্রায় আড়াই হাজার মণ পাট ক্রয়- বিক্রয় করা হয়। এবার পাটের দাম ভালো থাকায় কৃষক খুশি। আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই তিন মাস ভাসমান হাটে পাট কেনাবেচার প্রকৃত মৌসুম। নৌকা ছাড়া শুকনো স্থানেও এখানে হাট বসে বলে তিনি জানান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, এ বছর বন্যার কারণে পাটের আশানুরুপ ফলন হয়নি। তবে আগের চেয়ে তুলনায় দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক এখন পাট চাষে মনোযোগী হচ্ছে। নিউজ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
Leave a Reply