জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে প্রিসাইডিং অফিসার এবং সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ ১৫ জনকে শাস্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া সাতটি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সাত কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে। জাল ভোট দেওয়া ১৫ জনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আছেন। এ ছাড়া জাল ভোটদানকারীরাও আছেন। জাল ভোটে সহায়তা করার জন্য তাদের নানান মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৭ ঘণ্টায় ভোট কাস্ট হয়েছে ২৭ শতাংশের বেশি। ৩০ থেকে ৩৫ জায়গায় ভোটকেন্দ্রের বাইরে ছোটখাটো ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। কোথাও আমাদের পুলিশের গাড়িতে ইট মেরে গ্লাস ভাঙা হয়েছে। কোথাও ভোটকেন্দ্রের পাশে ককলেট বিস্ফোরণ হয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে তা জানতে পেরেছি।
ইসি সচিব বলেন, আমাদের দুইজন প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করার সময় মারা গেছেন। একজন শনিবার রাতে দায়িত্বপালনকালে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। আরেকজন জামালপুরে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। এ পর্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় একজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে, তদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানাতে পারব।
ইসির দেওয়া তথ্যমতে, নির্বাচন ঘিরে সারাদেশে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ, ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড এবং ৭০০ এর বেশি র্যাব টহলে ছিল। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে ছিল সশস্ত্র বাহিনী। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরাও মাঠে ছিল। এ ছাড়া প্রতিকেন্দ্রে ছিল ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য।
এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ, ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। মোট ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারে।
এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে ২৮টি দল অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন।
নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ২৬৬ জন প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬৫ জন প্রার্থী দিয়েছে জাতীয় পার্টি এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩৫ জন প্রার্থী রয়েছেন ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে আসা তৃণমূল বিএনপি।
এদিকে বিএনপিসহ ৬০টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দলটি সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে সফলতা না পেয়ে নির্বাচনের দুই মাস আগ থেকে হরতাল-অবরোধের পথ বেছে নেয়। এতে সরকারকে চাপে ফেলতে না পেরে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর ‘অসহযোগ আন্দোলনের’ ডাক দেয় দলটি। পাশাপাশি সরকারকে সকল প্রকার কর, খাজনা, পানি, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ বিল দেওয়া স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায় দলটি।
অনলাইন ডেস্ক
Leave a Reply