বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ফলে বিদেশি তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো (আইওসি) কাজ করতে আরও আগ্রহী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের একাধিক কোম্পানি পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগও করেছে।
গভীর এবং অগভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য গত রোববার আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। দরপত্রে অংশ নিতে ৫৫টি আইওসির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দরপত্র প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার (১১ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জ্বালানি বিভাগ।
এতে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেন, এবারের বিডিংয়ে বেশ কিছু নতুনত্ব আছে। এ কারণে আশা করা হচ্ছে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে। এর একটি হলো ব্রেন্ট ক্রুডের (অপরিশোধিত জ্বালানি তেল) সঙ্গে দাম সমন্বয় করা। আগে এটা ছিল ফার্নেস অয়েলের সঙ্গে। এতে আস্থার সংকট ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্টের দাম বাড়লে প্রাপ্ত গ্যাসের দাম বাড়বে। আবার কমলে কমবে।
বাড়তি সুবিধার মধ্যে আরও আছে কর মওকুফ ও হিস্যা বাড়ানোর বিষয়। অর্থাৎ, বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠানকে কোনও ধরনের কর দিতে হবে না। সংশোধিত মডেল পিএসসিতে (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) এমন সুবিধার পাশাপাশি সাগরে প্রাপ্ত গ্যাসের হিস্যার পরিমাণও আগের চেয়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া গ্যাস রপ্তানির সুযোগসহ বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হচ্ছে আরও সুবিধা।
তবে এক্ষেত্রে দেশের স্বার্থও অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, সমালোচনা যারা করেন, তাদের মুখে ছাই দিয়ে আমরা আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর একটি ইতিবাচক জায়গা দেখাতে পেরেছি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের প্রাথমিক কাজ শুরু হলো। ২৪টি ব্লকে আমরা দরপত্র ডেকেছি। সরকার চায় যাদের গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান কাজে সফলতা আছে, বিশ্বের এমন বিখ্যাত কোম্পানি এই উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিক।
পেট্রোবাংলা বলছে, সাগরে তেল-গ্যাস পেলে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাদের অংশের তেল বা গ্যাস প্রথমে পেট্রোবাংলা এবং পরে দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে হবে। দেশের কোনো প্রতিষ্ঠান কিনতে রাজি না হলে, তখন তারা তা বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব নুরুল আলম বলেন, আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের সম্পদ আহরণে উদ্যোগ নিতে হবে। শুধু সমুদ্র নয়, স্থলভাগেও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করতে হবে।
আর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, পেট্রোবাংলার উদ্যোগে দুটি ডেটা সেন্টার করা হবে। এখানে ৮টি প্যাকেজে ডেটা প্রস্তুত থাকবে। আগ্রহীরা এই ডেটা কিনতে পারবে। তেলের জন্য ২০ বছর এবং গ্যাসের জন্য ২৫ বছর ধরা হয়েছে চুক্তির মেয়াদ।
অনলাইন ডেস্ক আরটিভি
Leave a Reply