চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সোনাইছড়ি খালে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ বন বিভাগ কর্তৃক অপরিকল্পিতভাবে কেটে দেয়ায় অনেক অসহায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এরই মধ্যে প্রায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রধান বন সংরক্ষক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়ার মৃত মোজাফফর আহমদের পুত্র ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোহাম্মদ জেয়াবুল হক।
আবেদনটি সদয় বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছেন চট্টগ্রাম–১৫ সংসদীয় আসনের সদস্য আব্দুল মোতালেব সিআইপি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আবদুল আলীম, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনজুমান আরা ও সোনাকানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন।
গত ১৯ মার্চের আবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে কোনো পরিকল্পনা কিংবা বিনা নোটিশে চট্টগ্রাম সার্কেলের সিএফও, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও এর নির্দেশনায় সদরের এসিএফ সহ বিভিন্ন রেঞ্জার, বিট ও বিভিন্ন ষ্টেশনের প্রায় শতাধিক ফরেষ্টার ও এফজি এই বাঁধ কাটায় অংশগ্রহণ করে।
ওই বাঁধ কেটে বদ্ধ পানি ছেড়ে দেয়ায় সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা শীতের রাতে পানিতে তলিয়ে যায়। যার ফলে ব্যক্তি মালিকানাধীন, বনবিভাগ ও খাস জমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং সীমানা তছনছসহ ফলজ–বনজ গাছ বাগান,
ক্ষেত–খামার, মৎস খামার, পুকুর, গবাদিপশু–পাখি, ঘরবাড়ি ও দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষয়ক্ষতি হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। কেটে দেয়া অবৈধ বাঁধের নিচে সোনাইছড়ি খালের দুই পাশে অভিযোগকারী ওই কৃষকের খতিয়ানভূক্ত ৫৫ একর জমি রয়েছে।
সেখানে বিভিন্ন ফলের বাগান ও মৎস্য চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। অপরিকল্পিত ও অঘোষিতভাবে বাঁধ কেটে দেয়ায় তার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
বিগত ২০২১ সাল হতে অত্র এলাকার হাজার একর সংরক্ষিত বনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি ছড়ায় (সোনাইছড়ি খাল) প্রভাবশালীরা বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম লেক (ন্যাচারাল লেক) সৃষ্টি করে রমরমা মাছ, মাটি, কাঠ ও পর্যটন ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।
বিষয়টি বন বিভাগ শুরু থেকেই অবগত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হাতি ও বন্য প্রাণীর চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হওয়ার পর ও বন বিভাগ এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো উক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়ীতে পরিবার পরিজন নিয়ে আতিথেয়তা গ্রহণ করে ভোজনবিলাসে ব্যস্ত ছিল।
শুধু তাই নয় সময়ে সময়ে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন মহল ও উপজেলা প্রসাশনের কর্তা ব্যাক্তিরা পরিবার পরিজন নিয়ে অবৈধ কৃত্রিম লেকে নৌ বিহারে বিলাসী সময় পার করতে ও দেখা গেছে।
লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া ও সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের প্রায় ৪ হাজার ২৫৫ একর জমির চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। পরে বনবিভাগ বাঁধ কেটে প্রায় হাজার একর বনভূমি উদ্ধার করে।
শুধু তাই নয়, আবেদনটি তিনি সদয় বিবেচনার জন্য বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব,চট্টগ্রাম ১৫ আসনের সংসদ সদস্য,
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, বন সংরক্ষন কর্মকর্তা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অনুলিপি দিয়েছেন।
Leave a Reply