বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ যতোই ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে, আতঙ্ক ততোই বাড়ছে বাগেরহাটে। জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। পাশাপাশি উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলায় দূর্যোগ সহনীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভবন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। একইসঙ্গে বন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে আসতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে শনিবার (২৫ মে) দুপুর থেকে হালকা হাওয়াসহ থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যার পরপর বাতাসের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। পূর্ণিমা থাকায় জেলার সব নদ-নদীতে বেড়েছে পানির উচ্চতা। জেলার নদীতীরবর্তী মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকজনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় এদিন দুপুরে জরুরি সভা করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সভায় নিজস্ব ‘এলার্ট স্ত্রী’ জারি করে সব বাণিজ্যিক জাহাজকে বন্দর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ৩৩টি জাহাজসহ সব লাইটার জাহাজ বন্দর চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ নিরাপদ স্থানে রাখতে মোংলা বন্দর জেটি খালি করে দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, মোংলা বন্দর, সুন্দরবন বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
মোংলা বন্দরের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ মাকরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।সার্বিক প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, • ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় জেলায় ৩৫৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলবর্তী শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলার দূর্যোগ সহনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভবনগুলোও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত আছে সিপিপি, যুব রেড ক্রিসেন্টসহ ৩ হাজার ‘৫০৫ স্বেচ্ছাসেবক। সেইসঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা, ৬৪৩ মেট্রিক টন চাল, শুকনা খাবার, পানিসহ পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসার খবরে বন বিভাগের সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করে তাদের নিরাপদ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ মৌয়াল ও জেলেদের সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে আসাতে বলা হয়েছে।
সূত্র: অনলাইন ডেস্ক আরটিভি
Leave a Reply