চুয়াডাঙ্গা সদরে মোহাম্মদ জমা ডিএএসএস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সামনে রেখে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া কেন্দ্র করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান মানিক ও চুয়াডাঙ্গা সদর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল রানার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তবে এই সংখ্যা বাড়তে পাড়ে। এ ঘটনায় রাতেই দুইপক্ষ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী।
প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে নাম না প্রকাশ করে বলেন, ৭ জুলাই মোহাম্মদ জমা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। মঙ্গলবার ছিলো মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এদিন আগে থেকেই জুয়েল গ্রুপের লোকজন মনোনয়নপত্র জমা দিতে বিদ্যালয়ে আসেন। এর কিছু পরে মানিক চেয়ারম্যান তার গ্রুপের লোকজন নিয়ে এলে বাধে বিপত্তি। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নিলে, উভয় পক্ষের প্রায় ১২ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, সংঘর্ষ লাগার কিছুক্ষণের মধ্যে খবর পেয়ে সরোজগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হলে সদর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও দুই পক্ষকেই কঠোর হুশিয়ারি দেন।এ বিষয়ে কুতুবপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান মানিক বলেন, আমরা শান্তশিষ্টভাবে বিদ্যালয়ে মনোনয়নপত্রম জমা দিতে আসি। সেসময় হঠাৎ করেই আগে থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করা জুয়েল গ্রুপের লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে আমাদের ৫-৬ জন আহত হয়েছেন। আমরা রাতেই থানায় মামলা করেছি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছিলাম।
সেসময় মানিক চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এতে আমাদের ৫-৭ জন লোক আহত হয়েছেন। আমরাও থানায় মামলা করেছি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে যায় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুরো এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করেছি। যতটুকু খোঁজ পেয়েছি, তাতে ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। দুই পক্ষই থানায় মামলা করেছে। পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
এদিকে, সংঘর্ষের পরে শুম্ভনগর পুলিশ ক্যাম্প, সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্প, কুতুবপুর পুলিশ ক্যাম্প ও সরোজগঞ্জ ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা পুরো এলাকায় প্রহরায় রয়েছেন। তবে সচেতন মহল মনে করে, মানিক ও জুয়েল গ্রুপের লোকজনের মধ্যে যে কোনো সময় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধতে পারে। তাই পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
Leave a Reply