প্রতি বর্ষা মৌসুমেই পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এরই মধ্যে দেশের অনেক জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এরই মধ্যের খুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের ফারাক্কার বাঁধ। এ খবরে কুষ্টিয়া দৌলতপুর পদ্মাপাড়ের মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এখনই আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হচ্ছে। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষও বন্যার আশঙ্কা করছেন।
সেটি হলে উপজেলার চার ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যদিও বুধবার দুপুর পর্যন্ত নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়নি। পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, পদ্মাতীরে বন্যার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা।
ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মা নদীতে গত জুলাই মাসে কয়েক দফা পানি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে চরের কিছু আবাদি জমিসহ প্লাবিত হয়েছিল নিম্নাঞ্চল। আগস্টের মাঝামাঝি পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। তবে ভারত ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এরই মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। চরাঞ্চলে বন্যার ঝুঁকিতে থাকা চারটি ইউনিয়নের মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য দুটি আশ্রয়কেন্দ্রসহ নদীর কাছাকাছি স্কুল-কলেজের বহুতল ভবনগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বন্যা দেখা দিলে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য উপকরণের সংকট যাতে না হয়, সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
দৌলতপুর সীমানায় পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে পাউবো। মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ভাগজোত পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পায়নি। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৩ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার,
যা বিপৎসীমার ২ দশমিক শূন্য ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গত সোমবারের তুলনায় বুধবার সকালে দশমিক শূন্য ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৯ সেন্টিমিটার। এটি বিপৎসীমার ১ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার নিচে আছে বলে পাউবো সূত্র জানায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পাউবোর তথ্যমতে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এ সময় উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
এবারও ভারী বর্ষণ ও উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে চরের বিস্তীর্ণ মাঠ। চরাঞ্চলে চাষ করা ধান, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত ডুবে যায়। তবে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেনি।
Leave a Reply