শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার একটি ক্লিনিকে ডেলিভারি অপারেশনকালে প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু অভিযোগে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। এদিকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কারণ হিসেবে রক্তক্ষরণের কথা বলছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত ১০টায় ডামুড্যা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর আগে ঢাকা নেওয়ার পথে দুপুর ২টার দিকে নবজাতকটি মারা যায়। অন্য দিকে রাত ৮ টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে প্রসূতি মা মারা যায়।
ওই প্রসূতির নাম আকলিমা। তিনি উপজেলার পূর্ব ডামুড্যার আনোয়ার হোসেন স্ত্রী। তিনি ছেলে শিশু জন্ম দেন।
স্বজন ও ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, গত রাত তিনটার দিকে ক্লিনিকে প্রসব বেদনা নিয়ে আসে। তখন হাসপাতালে ডাক্তার ছিলেন না। সিনিয়র নার্স সোহানা এই রোগীকে ভর্তি করেন। ভর্তি করার পরে প্রসব বেদনা বেড়ে গেলে তাকে ওটিতে নিয়ে যায়। তার নরমালে ছেলে বাবু ডেলিভারি হয়। ডেলিভারির পর হঠাৎ করে বাচ্চার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।
তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। সকাল সাতটার দিকে প্রসূতি মায়ের শরীরে অবস্থা খারাপ হওয়া শুরু করে। তাকে রক্ত দেওয়া হয়। পরে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে ট্রান্সফার করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। বেলা দুইটার সময় বাচ্চাটি মারা যায়। রাতে আইসিউতে মা মারা যায়। এতে স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ক্লিনিক ও ক্লিনিকের ফার্মেসি ভাঙচুর করে।
মৃত আকলিমার ভাই কাউছার বলেন, রাতে আমরা রোগী নিয়ে আসি ক্লিনিকে। তারা আসার পর পরই আমাদের বিভিন্ন ওষুধ আনতে একটি স্লিপ ধরিয়ে দেন। পরে ভোরে আমাদের ছেলে বাবু হয় নরমালে। তখন কোনো ডাক্তার ছিল না। আমরা বারবার ডাক্তারের কথা বললে তারা তা শোনেই না। সকালে ক্লিনিকের পরিচালক আসার পর সে রোগীকে রক্ত দিতে বলেন। তারা রক্ত দেন। আবার আমি ডাক্তারের কথা বললে সে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। বলে এই সব রোগী এমন ই হয়। ৯ টার দিকে ডাক্তার এসে রোগী দেখে ঢাকা মেডিকেলে পাঠান। আমার ভাগিনাও শেষ আমার বোনটাও শেষ। আমি এর বিচার চাই।
ডামুড্যা ডায়াগনস্টিক এন্ড ক্লিনিক এর পরিচালক আব্দুর সত্তার বলেন, রাতে এই রোগী আমাদের এখানে আসে। কিন্তু আমাদের সিনিয়র নার্স এটি জানাননি। সকালে রক্ত না থামার কারণে সে আমাকে জানায়। আমি দ্রুত ডাক্তার সাথে কথা বলে রক্ত দিতে বলি। পরে আমি আসি। তার কিছু সময় পর ডাক্তার এসে রোগী দেখে। সে প্রসূতির রক্ত না থামার কারণে রেফার্ড করেন ঢাকা মেডিকেলে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সব সময় তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
ডামুড্যা থানার অফিসার ইনচার্জ এমারত হোসেন বলেন, আমরা ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসি। এসে দেখি ক্লিনিকের নিচের তলা ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা। আমাদের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা খোকন বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখবো। প্রথমে তদন্ত কমিটি গঠন করবো। পরে দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র: অনলাইন ডেস্ক আরটিভি
Leave a Reply