খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, আরএমওসহ ৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে মেডিকেল কলেজের একদল শিক্ষার্থী তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ৪১ চিকিৎসক হাসপাতালে আসেননি।চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। বিশেষ করে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসককে না পেয়ে অনেক রোগী দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরে গেছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মঙ্গলবার হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে মেডিকেল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হন কার্ডিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক মোস্তফা কামাল। এরপর তিনি দুটি কাগজ ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের সামনে দেন। একপর্যায়ে তাকে চাপ ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে গণপিটুনি দেওয়ার হুমকি দিয়ে কাগজ দুটিতে স্বাক্ষর করিয়ে নেন, যার একটি ছিল আক্তারুজ্জামানের পদত্যাগপত্র ও অন্যটি হলো ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণার।
৪১ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত করার ওই কাগজে উল্লেখ করা হয়, হত্যাচেষ্টা, অকৃতকার্ষ করার হুমকি, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চিকিৎসকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
টিকিট মাস্টার সাবরিনা আক্তার বলেন, স্বাভাবিক দিনের মতোই রোগী এসেছেন। যেহেতু চিকিৎসক–সংকট, এ কারণে গুরুতর রোগীদের অন্য চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হচ্ছে। আর একটু কম গুরুতর রোগীদের আগামী শনিবার আসার জন্য অনুরোধ করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা থেকে আসা আরেফিন বিল্লাহ নামে এক রোগী বলেন, বাড়ি থেকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি সকাল ১০টার দিকে। দুপুর পার হলেও চিকিৎসক আসেননি। আমি শিক্ষকতা করি, আজ ছুটি থাকায় এসেছি। অথচ এসে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। শুধু আমি নই, অন্য রোগীরাও ফিরে যাচ্ছেন।
সাদিয়া আফরিন নামে আরেক রোগী বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছি সেই সকালে, এখনও দেখাতে পারিনি। আজ তো দেখাতে পারিনি, আগামীকালও ডাক্তার আসবে কি না জানি না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুমন রায় বলেন, মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের দাবির বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল।
এ সময় ডাক্তার মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী এসে আমাদের ঘিরে রাখে। তারা উপপরিচালককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। আমাদের প্রায় ৪১ জন চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
সূত্র: অনলাইন ডেস্ক আরটিভি
Leave a Reply