প্রসূতি মূত্যুর পর সিলগালা হলো অপারেশন থিয়েটার, গঠন করা হলো তদন্ত কমিটি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ভূল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকালে এই অভিযান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম।
অভিযানে দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপারেশন থিয়েটারের ক্রুটি থাকার কারণে তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য সিলগালা করা হয়। একই সাথে ভূয়া চিকিৎসকের মাধ্যমে অপারেশন পরিচালনা করে প্রসূতি মৃত্যুর আলোচিত ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামি সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
অভিযোগ রয়েছে, যশোর জেনারেল হাসপাতালের সামনে দীর্ঘ দিন ধরে দালার মারফতে সিজারিয়ানের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছে ১০ বেডের এই ক্লিনিকটি। স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কার্ডসর্বস্ব সাংবাদিকদের হাত করে এই ব্যবসা ধরে রেখেছেন ক্লিনিক মালিক পক্ষ। নানা অনিয়ম, ভূল চিকিৎসার অভিযোগ থাকলেও এর আগে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আলোচিত দেশ ক্লিনিকে গত মঙ্গলবার(২৪ সেপ্টেম্বর) শহরের ধর্মতলার কদমতলা এলাকার শ্রাবণ ইসলামের স্ত্রী প্রসূতি অনন্যা রহমান বৃষ্টিকে ১০ হাজার টাকায় সিজারের জন্য দালালের মাধ্যমে চুক্তি করে। চুক্তি মারফত সিজার সম্পন্ন করা হলেও রোগীর শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। সিজার করেন শান্তা ইসলাম নামে এক অদক্ষ চিকিৎসক। সিজারের দুই দিন পর বৃহস্পতিবার প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রেফার্ড করা হয়। পরবর্তীতে রোগী শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
নিহত রোগীর স্বামী শ্রাবণ ইসলাম ও পিতা হামিদুল ইসলাম বলেন, ভূল চিকিৎসার কারণে তাদের রোগী মারা গেছেন। ছোট নবজাতকটি এখন মাতৃহারা। রোগী মারা যাওয়ার পর নানা ভাবে তাদের হাত করার চেষ্টা করেছে ক্লিনিক মালিকপক্ষ। পরবর্তীতে কোনো ভাবে তারা মেনেজ না হলে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি করেছেন।
যশোর সিভিল সার্জন মাহমুদ হাসান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান করা হয়েছে। তাদের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের নায্য বিচার ও ক্লিনিকের অনিয়মের বিরুদ্ধে সকল ধরণের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযান পরিচালনার সময় সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসানের সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার রেহেনেওয়াজ, অনুপম দাস প্রমুখ।
Leave a Reply