স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের সার্বিক প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য সেবার ওপর কাজ করে যাচ্ছে যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মৌলিক স্বাস্থ্য সুবিধাসমূহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য নীতি প্রণয়নের ফলে বদলে যাচ্ছে যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে থাকা গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা, এক জরিপে এ তথ্য মিলেছে।
জানা গেছে, যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর ও নড়াইল জেলায় শুরু হয় বিভিন্ন উন্নয়নযজ্ঞ, এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উন্নয়ন, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য স্থাপনাসমূহের উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ।
ধারাবাহিক এসব নির্মাণ কাজের মধ্যে রয়েছে, যশোর জেলা উপ-পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অফিস নির্মাণ। যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করণ কল্পে নতুন ভবন নির্মাণ, উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণ, সিভিল ও বৈদ্যুতিক মেরামত ও সংস্কার কাজ। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গ্যাস প্ল্যান্ট রুম নির্মাণ এবং ১০০ শয্যা হাসপাতাল বিশিষ্ট্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জন্য মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম সরবরাহ,
ইনস্টলেশন, পরিক্ষা ও কমিশনিং চালুকরা। নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলাধীন “অধ্যাপক শেখ মোঃরোকন উদ্দীন আহমেদ ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র” নির্মাণ কাজ। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা ৩১ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সীমানা প্রাচীর, পুনঃনির্মাণ এবং বিদ্যমান কোয়ার্টার মেরামত ও সংস্কার কাজ। নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ওপিডি ভবনের উর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ, মেরামত ও সংস্কার কাজ।
যশোর বিভাগের আওতাধীন যশোর ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সিসি নির্মাণ ও সিসি পুনঃনির্মাণ কাজ। যশোর বিভাগের আওতাধীন যশোর ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলা ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন স্বাস্থ্য স্থাপনাসমূহের মেরামত ও সংস্কার কাজ করা হয়েছে। যার সর্বমোট ব্যয় ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ৫ হাজার টাকা।
যশোর বিভাগের স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নিবার্হী কর্মকর্তা এ এফ এম আনিছুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নযজ্ঞের কাজ প্রায় শেষ, জনসাধারণকে তাদের কাঙ্খিত সেবা দিতে মন্ত্রণালয় থেকে জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকার সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া কর্মকান্ড গুলোও অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন,আমি বিগত আগষ্ট ২০২৪ মাস থেকে যশোর বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এই স্বল্প সময়ে বিগত ২৩-২৪ সালের কাজ শেষ করেছি ও কিছু চলমান আছে। যা খুব শিঘ্রই শেষ হবে। এছাড়াও পরিচালন বাজেটের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৭১.৪৭ লক্ষ টাকা কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সব কাজ সম্পন্ন করার পর যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। আশা করছি সরকারের এই উন্নয়নমূলক কাজ এই যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের (নড়াইল-যশোর) তৃণমুল প্রান্তিক জনসাধারণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিরাট ভুমিকা রাখবে।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা:মাহমুদুল হাসান জানান, যশোরের স্বাস্থ্যখাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। জেলার সকল স্বাস্থ্যখাতের প্রতিষ্ঠানগুলো চালু হলে, এ জেলার পাশাপাশি দূরবর্তী জেলার জনসাধারণও তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবে। যদিও বর্তমানে পরিপূর্ণ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ঘাটতি আছে, মন্ত্রণালয়ে প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের জনবলের ব্যাপারে চাহিদা পাঠানো হয়েছে, আশা করি দ্রুত ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় লোকবল পাওয়া যাবে।
নড়াইল জেলা সিভিল সার্জন ডা:সুব্রত কুমার বলেন, বর্তমানে নড়াইল জেলার স্বাস্থ্য খাত সফলতার সাথে কাজ করছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় এখানকার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উন্নয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকসহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মানের কারণে সাধারণ জনগণ তাদের কাঙ্খিত সেবা পাবে। আমরা বিশেষজ্ঞ লোকবলের সংকটে থাকলেও সর্বোচ্চ ভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছি।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর এর আহবায়ক মাস্টার নুর জালাল বলেন, বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক। এর মধ্যেই বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাদের উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যা যশোরের সাধারণ জগনগণেরর চাহিদা পূরণে সহযোগিতা করবে বলেই আমার বিশ্বাস।
যশোর ক্যাব সদস্য ও সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুর রকিব সরদার অপু জানান, অনেক বছর যশোর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ অসমাপ্ত হয়ে পড়ে থাকলেও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীর আন্তরিক চেষ্টায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে অনেকগুলি বড় বড় উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই উন্নয়নমূলক কাজের কারণে যশোর ও নড়াইলের সাধারণ মানুষ অধিকাহারে মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
Leave a Reply