চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বারঘরিয়া চুনারীপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে বিগতদিনে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ এর নাম ভাঙিয়ে জমি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ভুক্তভোগী মোঃ কয়েশ উদ্দিন সহ একাধিক পরিবার গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে এ বিষয়টি জানান। তবে এতদিন আব্দুস সালামের ক্ষমতার কারনে থানায় অভিযোগ না নেয়াই, তার ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেনি অসহায় পরিবারগুলো। এতদিন পর হলেও সেনাবাহিনীর উপর আস্থার কারনে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মোঃ কয়েস উদ্দিন সহ অন্য পরিবার গুলো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার আব্দুস সালাম আওয়ামীলীগের শাসনআমলে নিজেকে সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ এমপির ভাই পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতো। এবং সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিজের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা সাধারণ কৃষকের কৃষি জমি দখল করতেন বলে অভিযোগ করেন চামাগ্রাম এলাকার মৃত রুস্তম মোল্লার ছেলে মোঃ কয়েস উদ্দিন সহ ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো একত্রিত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেন যে, বারঘরিয়া নীলকুঠি মাঠের রানীহাটি মৌজার (জে,এল নং-১২২) ০.০৫০০ ও ০.০৩৩০ একর জমি সহ বেলাল উদ্দিন দিং নামে মোট ০.১১৬০ একর জমি দখল করে নেয় ভূমিদস্যু আব্দুস সালাম। তিনি কোনরকম পুলিশ প্রশাসন ও ভূমি আইনের তোয়াক্কা করতেন না।
তিনি কোনো নীতিমালা মানতে রাজি নন । ২০২২ সন ভূমি আইনে জোরপূর্বক জমি দখল ও বৈধ কাগজপত্র না থাকার পরেও সে ব্যক্তি মালিকানাধীন, ভূমি বা কোন সংস্থার জমি জোর করে দখল করে রাখেন তার শাস্তির বিধান হলো এক বছর থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড, এক লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে ।
এসব আইনের তোয়াক্কা না করে ভূমিদস্যু আব্দুস সালাম দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলো। তবে গত রবিবার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে আব্দুস সালামের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনীর একটি টিম। এতে করে সুচতুর ভূমিদস্যু আব্দুস সালাম রাতের অন্ধকারে সুকৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে গা ঢাকা দেয়।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর পক্ষে মোঃ কয়েস উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান, ভূমিদস্যু আব্দুস সালাম স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্যর কাছের ভাই হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে আমাদের ১২ টি পরিবারের রেকর্ডীয় এ জমি জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় লোকজন এতদিন তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পেতো।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরও জানান, আমাদের জমি দখল করেই ক্ষ্যান্ত হননি ভূমিদস্যু আব্দুস সালাম। তিনি আমাদের জমি দখল করে আবার আমাকে প্রধান আসামি করে আমাদের ১০ জনের বিরুদ্ধে মারধোর, শ্লীলতাহানি ও বাড়িতে ঢুকে লুটপাট ভাংচুরের মিথ্যা মামলা করেছিলো।তদন্তকারী কর্মকর্তা যার কোনো সত্যতা না পাওয়ায় আমাদের বেকসুর খালাস দিয়েছে মহামান্য আদালত।
আব্দুস সালাম পলাতক থাকায় তার সাথে দেখা পাওয়া যাইনি আবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সেনাবাহিনী ক্যাম্পে খোঁজ নিতে গেলে সদর মডেল থানায় যোগাযোগ করতে বলেন। তবে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম জাকারিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এধরণের তথ্য নাই বলে জানান তিনি।
Leave a Reply