নীলফামারী॥ সৈনিক পদে নিয়োগের জন্য ৫৬ বিজিবি নীলফামারী ব্যাটালিয়ানের আয়োজিত পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে শনিবার (৯ নভেম্বর) সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিপ্রত্যাশীরা। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলে এই অবরোধ, যার ফলে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কের দারোয়ানীস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের সামনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। চাকরিপ্রত্যাশীরা বিভিন্ন স্লোগানে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশীর বক্তব্যে জানা যায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অনিয়ম দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষায় নির্ধারিত সিরিয়াল অনুসরণ না করে অগোছালোভাবে প্রার্থীদের ডাকা হচ্ছিল। প্রথমে ১ থেকে ১৭ নম্বর সিরিয়ালের প্রার্থীদের ডাকার পর হঠাৎ করে ৪৫ নম্বর সিরিয়াল থেকে ডাকা শুরু করা হয়। এতে আগে উপস্থিত হওয়া অনেক প্রার্থী পরীক্ষার সুযোগ পাননি, কিন্তু পরবর্তী সিরিয়ালের প্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছিল। এছাড়া, অনেক চাকরিপ্রত্যাশীকে যথাযথ মেডিকেল পরীক্ষা ছাড়াই বাদ দেওয়া হয় বলে তারা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, “আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হলেও আমাদের ডাকছিল না। যাদের পরবর্তীতে এসেছিল তাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল। এভাবে পরীক্ষা নেওয়া হলে তো আমাদের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘিত হয়।” একাধিক চাকরিপ্রত্যাশী জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা না থাকায় তারা বিরক্ত ও হতাশ হয়েছেন। এই অনিয়মের বিষয়ে তারা প্রতিবাদ করলে কিছু প্রার্থীকে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়, যা তাদের ক্ষোভের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধে নামেন তারা।
সকাল থেকে চলে আসা বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিজিবি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাটি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। পরে ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রত্যাশীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।
এই প্রসঙ্গে ৫৬ বিজিবির নীলফামারী ব্যাটালিয়ানের উপ-অধিনায়ক মেজর আলী আকবর সাংবাদিকদের জানান, “শনিবার (৯ নভেম্বর) সৈনিক পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। চাকরিপ্রত্যাশীদের এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার সময় ও স্থান সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি তদারকি করতে ঢাকার বাইরে থেকে একটি বিশেষ নিয়োগ টিম এসেছে। তবে, চাকরিপ্রত্যাশীরা দাবি করছেন, তাদের সিরিয়াল ভেঙে ডাকা হয়েছে এবং মেডিকেল পরীক্ষা সঠিকভাবে হয়নি। এ কারণে চাকরিপ্রত্যাশীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আজকের পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন তারিখ নির্ধারণ করে চাকরিপ্রত্যাশীদের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।”
স্থানীয়রা মনে করেন, এই ধরনের অনিয়ম চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে হতাশা এবং অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
Leave a Reply