লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজা থেকে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান ওরফে হুন্ডি সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। সুমন খান লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা শহরের কালীবাড়ি মাস্টারপাড়া এলাকার মৃত বাচ্চু খানের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, জমি দখল, হুন্ডি ব্যবসা, চোরাচালান ও টেন্ডারবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে লালমনিরহাট সদর থানায় প্রায় ১০টি এবং ঢাকার বিভিন্ন থানায় ৬টি মামলা রয়েছে। তিনি এসব মামলায় দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জানান, সুমন খান সদর থানায় মানি লন্ডারিংয়ের একটি, দ্রুত বিচার আইনে দুটি, এবং আরও বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলার আসামি। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন থানায় ৬টি হত্যা মামলা এবং রংপুরের একটি হত্যা মামলায়ও পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে যে, সুমন খান কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এসএন পরিবহনের একটি স্লিপার নৈশ্যকোচে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজায় অভিযান চালিয়ে ওই বাসটি আটক করে এবং তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার সহযোগী রাজু মিয়াকেও আটক করা হয়।
এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর রাতে সিআইডি’র সহকারি পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার বাদী হয়ে অর্থ পাচার আইনে সুমন খান, তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমা, এবং কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সিআইডি দাবি করে, সুমন খানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৩৭ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬০ টাকা এবং তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমার অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩১০ টাকা পাওয়া গেছে।
সুমনের কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের অ্যাকাউন্টেও ১৮৬ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ১২৭ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বৈধ আয়ের উৎস না থাকা সত্ত্বেও এসব অর্থের বিপুল লেনদেন, স্থানান্তর এবং রূপান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেছে।গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
Leave a Reply