আবারো ভেঙে গেলো প্রবাসের অন্যতম বড় আঞ্চলিক ও সামাজিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি। গত ৮ নভেম্বর ২০২৪,শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ব্রুকলিনে সংগঠনের কার্যালয়ে শপথ গ্রহণ করেছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী মাকসুদুল এইচ. চৌধুরীসহ কার্যকরী পরিষদের ১৩ জন। ফলে ভাঙন নিয়ে যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত হলো।
মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- গত ২০ অক্টোবর ২০২৪,রোববার অনুষ্ঠিত উত্তর আমেরিকার অন্যতম বড় সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনের রাতেই ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষসহ মাকসুদ-মাসুদ প্যানেলের ১৩ জন এবং অন্য পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদকসহ ৬ জন জয়ী হয়।
কিন্তু ফলাফল ঘোষণার ৬ দিন পর সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অন্য একটি ফলাফল ঘোষণা করা হয়, যা শুরু থেকে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। ফলে সংগঠনটিতে পুনরায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। নির্বাচন কমিশন একতরফাভাবে শপথ দেয়ার জন্য নির্বাচিতদের মধ্য থেকে কাউকে কাউকে গত ৩ নভেম্বর রোববার স্বাক্ষরবিহীন একটি নোটিশ প্রদান করেন। ওইদিন দুপুরেই শপথ দেওয়ার জন্য ভবনে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে পাশে অন্য একটি ভবনের সামনে সিকিউরিটি ও পুলিশের সহায়তায় ফুটপাতে কয়েকজনকে শপথ পাঠ করান, যা পুরো কমিউনিটিতে হাস্যরস্যে পরিণত হয়।
অন্যদিকে নির্বাচনের দিন মেশিন প্রদত্ত ফলাফল অনুযায়ী মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের জয়ী ১৩ জন গত ৮ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় সংগঠনের কার্যালয়ে শপথ নেন। তাদের অভিযোগ- নির্বাচন কমিশনের কাছে শপথের জন্য অনুরোধ করলেও তারা কোনো রকম সহযোগিতা না করায় অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেবুবর রহমান বাদল মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের ১৩ জনকে শপথ পাঠ করান।
যারা এই শপথ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন তাদের উদ্দেশ্যে মাকসুদ-মাসুদ পরিষদের বক্তব্য হচ্ছে চট্টগ্রাম সমিতির অতীত অনেক উদাহারণ আছে, যেখানে নির্বাচন কমিশন ছাড়াও এমনকী শপথবিহীন ব্যক্তিও শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন সম্প্রতি উদাহারণ অন্তবর্তীকালীন কমিটির শপথ। সংগঠনের বিশেষ প্রয়োজনে যেকোন শপথপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচিতদের শপথ পাঠ করাতে পারেন, এখানে সংগঠনের গঠনতান্ত্রিক কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।
শপথ নেওয়ার পর সভাপতি মাকসুদ চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোক্তাদির বিল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল ভুঁইয়া ও কোষাধ্যক্ষ সুমন উদ্দীন অনতিবিলম্বে নির্বাচিতদের হাতে সংগঠনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তারা আরো বলেন, সংগঠনকে সংকট থেকে দুর করার একমাত্র উপায় হচ্ছে শান্তিপুর্ণভাবে নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। অন্যতায় ভবিষ্যৎ যে কোন বড় ক্ষতির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিই দায়ী থাকবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সমিতি আগেও বিভক্ত ছিল। পরে সমিতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে দুই কমিটি বিলুপ্ত করে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে গত ২০ অক্টোবর রোববার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর চূড়ান্ত ফলে তাহের-আরিফ প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী আবু তাহের এবং সাধরণ সম্পাদক প্রার্থী আরিফুল ইসলামসহ দুই প্যানেলের ১৯ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী মাকসুদ-মাসুদ প্যানেল ফল প্রত্যাখ্যান করে। গত ৩ নভেম্বর রোববার দাহের-আরিফসহ ওই প্যানেলের বিজয়ীদের শপথ গ্রহণ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার খালেদ।
Leave a Reply