বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারে অনীহা
সেইক্ষেত্রে তারা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রি.জে.(অব.) এম সাখাওয়াতের নির্দেশনাকে থোড়াই কেয়ার করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, তারা কেন যে ধর্মঘট ডেকেছে- সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো কথায় বলেনি। নতুন টার্মিনালে সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে; এখানে নিরাপত্তাহীনতার কোনো বালাই নেই।
গত ১৪ নভেম্বর উপদেষ্টা ব্রি. জে. (অব.) এম সাখাওয়াত বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি উদ্বোধন করেন। এই টার্মিনালটি উদ্বোধনের পরপরই ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রফতানির পণ্য জট অনেকখানি কমে আসে।
অপরদিকে বেনাপোল বন্দরসহ শহর অঞ্চলে যানজটের তীব্রতা কমাতে সেখানে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় পৌর বাস টার্মিনালটি। ২০২৩ সালের ৪ মার্চ এই টার্মিনালটি প্রথম উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করা হলেও কোনো পরিবহন কর্তৃপক্ষ সেটি ব্যবহার করতো না। এরপর বিভিন্ন মিডিয়ায় বেনাপোলে তীব্র যানজটের বিষয়ে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেকারণে চলতি বছরের ৭ নভেম্বর এই টার্মিনালটি ব্যবহারের জন্যে যশোরের জেলা প্রশাসক নির্দেশনা দেন স্থানীয় প্রশাসনকে। বাস কর্তৃপক্ষ এই টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে খালি গাড়ি রাখতো। কিন্তু ট্রিপের গাড়ি যাত্রী নেওয়ার জন্যে ফের সীমান্ত এলাকায় থাকা সীমান্ত ঘেঁষা বেনাপোল স্থলবন্দর বাস টার্মিনালে (পুরানো টার্মিনাল) ভেড়াতে শুরু করে। এই অরাজকতা ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষে গত ২০ নভেম্বর বুধবার পুরনো টার্মিনালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারই প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ২২ নভেম্বর পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, মূলত দূরপাল্লার (ঢাকা থেকে বেনাপোল ও বেনাপোল থেকে ঢাকামুখি) পরিবহনগুলো তাদের অনৈতিকভাবে আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই নতুন টার্মিনালটি ব্যবহার করতে চাইছে না। সীমান্ত ঘেঁষা বেনাপোল স্থলবন্দর বাস টার্মিনাল (পুরানো টার্মিনাল) ব্যবহারে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। মূলত ভারত থেকে আসা লাগেজ পার্টির অবৈধ মালামাল তারা নির্বিঘ্নে পরিবহনে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা পুরনো টার্মিনালকেই বেশি সুবিধাজনক মনে করে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, বেনাপোলে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র যানজট ছিল। এখানকার বাসিন্দারা যানজটের নাকাল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি উপদেষ্টা মহোদয়ের উপস্থিতিতে পণ্য ও যানজট নিরসনে কার্গো ভেহিকেল ও নতুন বাস টার্মিনাল চালু হয়। এতে আমরা সাধারণ মানুষ স্বস্তিবোধ করছি।
পরিবহন শ্রমিক মিজানুর রহমান জানান, কয়েকদিন আগে শার্শা ইউএনও ও সুধী সমাজের সাথে আমাদের আলোচনা হয়। সেখানে যানজট নিরসনে পরিবহনগুলো নতুন পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী আমরা এই টার্মিনাল ব্যবহার করছি। তবে, যাত্রী হয়রানি ও নিরাপত্তার জন্যে শেষরাতের দূরপাল্লার পরিবহনগুলো যেন সীমান্ত ঘেঁষা পুরনো টার্মিনালটি ব্যবহার করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জানতে চাইলে যশোরের শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. নাজীব হাসান বলেন, কী কারণে তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) ধর্মঘট ডেকেছে, আমরা সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল নই। তাদের কোনোকিছু বলার থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন পৌর বাস টার্মিনালের নিরাপত্তার জন্যে আনসার সদস্য মোতায়েন, নারী-পুরুষের জন্যে পৃথক নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিংয়ের জন্যে কর্নার সবকিছুই রয়েছে। আমরা বলেছি, পাসপোর্ট যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্যে রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত তারা সীমান্তে যাত্রী নামিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু কোনো বাস আমরা সেখানে থাকতে দেবো না।
Leave a Reply