যশোরের শার্শা উপজেলার শার্শা সরকারি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কারও কথা না শুনেই মা ছেলেকে স্কুল থেকে বের করে দেন। অপমান আর পরীক্ষা দিতে না পারার ক্ষোভে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে যেয়ে বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তার ঠাঁই হয়েছে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেঝেতে।
যশোরের শার্শা উপজেলার বড় খান্দারতলা গ্রামের আবু তয়েবের ছেলে শার্শা সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সাকিব আল হাসান। সাকিবের পরিবারের দাবি পরীক্ষায় ফেল করাটা মূখ্য না, এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে । তাদের দাবি যে ফলাফল দেখানো হচ্ছে তা আদৌও সাকিবের না। এমনকি খাতা দেখানোর কখা বললেও প্রধান শিক্ষক লুকোচুরি করছেন।
এছাড়া মডেল টেস্টে উত্তীর্ন না হওয়া অনেকেই এসএসসির রেজিস্ট্রেশন করেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্শন করেছেন সাকিব ও তার পরিবার। অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকের দাবি সাকিবের পরিবারের বক্তব্য মিথ্যা। সাকিব অনিয়মিত ও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। ফলে তাকে রেজিস্ট্রেশন করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে, সোমবার রাত ১০টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেঝেতে শুইয়ে সাকিব জানায়,সে ৩য়শ্রেনী থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত নিজামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। ক্লাসের সেরা ছাত্রদের একজন ছিলো । নবম শ্রেনীতে চলে আসেন শার্শা সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তার মেধা অনুযায়ী বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১০ শ্রেনীতেও ভালো রেজাল্ট করেন।
সম্প্রতি সাকিব অসুস্থ্য হয়ে পরে। ডাক্তারের নির্দেশনায় প্রায় একমাসের বেশী সময় সম্পূর্ণ বেড রেস্টে ছিলো সে। এসময় পড়াশোনায় মনযোগ দিতে পারেনি সে। অসুস্থ শরীর নিয়েই মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় সাকিব। পরীক্ষার ফলাফলে জানতে পারে সাকিব ফেল করেছে। যা অবিশ্বাস্য বলে দাবি করে সাকিব। সে বলে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে খাতা দেখাতে বলা হলেও দেখাননি তিনি। তার একটায় কথা সাকিবকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেবো না। সোমবার সকালে তার মা প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের কাছে যান। পায়ে ধরে ক্ষমা চান। একটিবার সুযোগ দিতে বলেন মা-বাবা। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন তাকে ও তার মাকে লাঞ্চিত করে। একপর্যায়ে অপমান করেই বের করে দেন। তাই এ অপমান সহ্য করতে না পেরেই সাকিব আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো।
সাকিবের মা বলেন, তার ছেলে ভালো ছাত্র ছিলো। এ রেজাল্ট তার ছেলের হতে পারেনা। এরপেছনে অন্যকোনো কারণ রয়েছে। তিনি বলেন,এমন অনেক ছাত্র রয়েছে যারা ফেল করেছে কিন্তু তারাও এসএসসির রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছে। এমনকি স্কুলের অন্য স্যারেরাও সাকিবকে সুযোগ দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ জানান। কিন্তু আমজাদ হোসেন কারও কথা শোনেননি। তিনি বলেন, সাকিব অসুস্থ্য থাকার কারণে রেজাল্ট কিছুটা খারাপ হতে পারে। কিন্তু যে ফলাফল দেখানো হচ্ছে সেটা সাবিকের না। তিনি দাবি করেন, এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্দ্বোতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন মা-বাবাকে অপমানের বিষয় অস্বীকার করে বলেন,টেষ্ট পরীক্ষায় ফেল করায় সাকিবকে এসএসসি পরীক্ষা অংশ গ্রহন করতে দেওয়া হবে না বলেছি। কিন্তু সাকিব বিষ কেন খেয়েছে সেটা আমি জানি না। ফেল করেছে এমন কাউকেই রেজিস্ট্রেশন করতে দেয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেন আমজাদ।
Leave a Reply