কিন্তু কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গাছ। নতুন করে কাউকে আর খেজুরের গাছ রোপণ করতে দেখা যায়না। সেই সাথে গাছিরাও তাদের পেশা পরিবর্তন করার ফলে কমে গেছে গাছিদের সংখ্যা ।
এক যুগ আগেও এ জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে শীতের সকালে চোখে পড়তো খেজুর রসের হাঁড়ি ও খেজুর গাছ কাটার সরঞ্জামসহ গাছিদের ব্যস্ততার দৃশ্য।
তবে এবছর শীত ও কুয়াশা আসার আগেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
এক সময়ে খেজুরের রস আহরণের মধ্য দিয়েই গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। গাছিরা ভোরবেলা দড়ি -কাছি, ছ্যান ও দাও নিয়ে বেরিয়ে পড়ে রস সংগ্রহরের জন্য।
প্রথমে ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের মাথার সোনালি অংশ বের করে তারা। তারপর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে রাসায়নিক কোনও দ্রব্য ব্যবহার ছাড়াই খাঁটি গুড় তৈরি করেন এ জেলার গাছিরা।
শীত মৌসুমে রস-গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে এজেলার প্রায় ৬শতাধিক কৃষক পরিবার। এ থেকে স্থানীয় কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হন।
মধুখালী উপজেলার কয়েকজন গাছি জানান, খেজুরের রস সংগ্রহ অনেক কষ্টের কাজ। তাই সহজে কেউ এই কাজ করতে চায় না। যারা বেশি দরিদ্র তারাই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে।
বর্তমানে চলছে গাছ ছোলার কাজ। ১০ দিন পর গাছে নল স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস আহরণের মূল কাজ। তার কয়েকদিন পরই গাছে লাগানো হবে মাটির হাড়ি। সংগ্রহ করা হবে মিষ্টি স্বাদের খেজুরের রস।
তা দিয়ে তৈরি হবে লোভনীয় গুড় ও পাটালি। এই গুড় ও পাটালি বাজারে বিক্রি করে চলবে গাছিদের সংসার। গাছিরা আরো জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে উঠান বৈঠক,
গাছি সমাবেশ ও খেজুরের গুড়ের মেলার আয়োজন করলে ব্যাপকভাবে খেজুর গুড়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। সেই সাথে ব্যবসায়ীদের ভ্যাজাল গুড় উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ হবে বলে দাবী গাছিদের।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা জানান, সামনে গাছিদের একত্রিত করে সতর্ক করবো, যাতে তারা মানসম্মত গুড় তৈরি করে বাজারজাত করে।
অন্য কোন রাসায়নিক উপাদান যাতে ব্যবহার না করে, সে বিষয়ে বলা হবে। মানসম্মত গুড় তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা গাছিদের পাশে থাকবো।
Leave a Reply