আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মুন্নু মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ঘিওর এলাকা জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে নিহত লাভলু আহমেদ ২০০৩ সালে ঘিওর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। গত চার মাস আগে কুয়েত প্রবাসী লাভলু আহমেদ দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে মাঠে নামেন। আহতরা হলেন, কুস্তা গ্রামের মৃত দীন ইসলামের ছেলে ঘিওর সদর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রাহাতুজ্জামান খান আলতাফ (৪২), একই গ্রামের শওকত দর্জির ছেলে ওয়ার্ড যুবদল নেতা হিমেল দর্জি (২৫),
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মো: আফিকুল ইসলাম, ঘিওর উপজেলা মোড় এলাকার বাসিন্দা মো: রফিকের ছেলে সোহাগ (২৫), আজাদ খানের ছেলে তামিম (২৫) ও শাহ আলমের ছেলে মো: সেলিম (২৮)।
একাধিক সুত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার এবং রাজনৈতিক কোন্দল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিল। এ নিয়ে কয়েক দফা মারামারি, শালিস বৈঠক ও হামলা-ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। গোপন সূত্রে জানা যায়, এলাকার ক্ষমতা আর আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে উপজেলা মোড় ও কুস্তা গ্রামের বিএনপি নেতা কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে।
এ বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দও কয়েক দফায় আলোচনা করে মিমাংশা করে দিয়েছেন। নেতাদের সামনে সমঝোতা হলেও আড়ালে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব থেমে নেই। সেই দ্বন্দ্বের কারণে এ সংঘর্ষ ঘটেছে।প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও হতাহতের স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, আজ সোমবার বেলা বারোটার দিকে ঘিওর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় যুবদল নেতা কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা হিমেলকে উপজেলা মোড় এলাকার সোহাগ, তানভীর,
বাবু, শীতল, তামিম, সেলিমসহ আরো অন্তত ১৫-২০ জন বেধড়ক পেটায়। এসময় দুই গ্রুপের মারামারিতে আহত হিমেল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাবার পথে পুনরায় তাদের উপর হামলা চালায়। এরপর ওই আহতদের দেখার জন্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা লাভলু মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আফিকুল ইসলাম,
ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রাহাতুজ্জামান আলতাফ হাসপাতালের গেটে যাওয়ার পর পরই তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। এসময় দেশিয় চাপাতি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে লাভলু, আলতাফ ও হিমেলকে। খবর পেয়ে ঘিওর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত লাভলুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
পরে সেখান থেকে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। আহত আলতাফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, আমি এলাকায় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছু জানিও না।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষেই লাভলু আহমেদের মৃত্যু হয়েছে। আরো কয়েকজন আহত আছে। তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply