মঙ্গলবার দুপুরে যশোর ২৫০শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে। তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সরকারি অডিট আপত্তি এড়াতে, ইনকাম ট্যাক্স, ভ্যাট থেকে বাঁচার জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত আইসিইউর ইউজার ফির অর্থ ব্যাংক একাউন্ট না করে কমিটির মাধ্যমে তা হাসপাতালের লকারে রাখা হয়। এই অর্থ দিয়ে তাৎক্ষণিক আইসিইউর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ করা হয়।স্বেচ্ছায় কর্মচারীদের বেতন প্রদান করে অবশিষ্ট টাকার জমিয়ে রাখা হয়।
সেই জমানো ২০লাখ টাকা নিয়ে তিনি পালস মিটারসহ বিভিন্ন মেশিনারিজ যাচাই-বাছাই করে কেনার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তিনি আরও জানান সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করে সরল বিশ্বাসে টাকা সাথে করে নিয়ে যাওয়া, ব্যাংক একাউন্ট না করা, সাথে মালামাল ক্রয়ের কোটেশন কাছে না রাখার আমার অপরাধ হয়েছে। এই জন্য ‘আমি সকলের সামনে ভুল স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাচ্ছি।’
সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যক্ষর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, অধ্যক্ষকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে জনমনে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে আমরা এর সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করছি।
যশোর জেলা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির ২১সেপ্টেম্বর২০২১ তারিখের বৈঠকে স্থানীয় উদ্দোগে হাসপাতালের আইসিইউ পরিচালনার জন্য রোগী প্রতি ভর্তি ফি ১হাজার টাকা এবং দৈনিক বিছানা ভাড়া ৫শ টাকা নিয়ে তহবিল গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। এই টাকা দিয়ে হাসপাতালের আই সি ইউ র দৈনন্দিন খরচ,
বেসরকারী ভাবে নিয়োজিত সেবাকর্মীদের (আয়া, ক্লিনার, গার্ড ও বয়) বেতন প্রদান, প্রয়োজনে গরীব ও দুঃস্থ রোগিদের সহায়তা প্রদান এবং অকেজো হয়ে পড়া যন্ত্রপাতি তাৎক্ষনিক মেরামতসহ অতীব জরুরী যন্ত্রপাতি যা সরকারী ভাবে প্রাপ্যতা নিশ্চিত নয় তা ক্রয় করে আইসিইউ সেবা অব্যহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
এই ব্যাপারে ডাক্তর আবু হাসানাত মোঃ আহসান হাবীবকে দায়ীত্ব দেওয়া হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকেই প্রধান করে তহবিলের পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। এই ধারাবাহিকতায় প্রায় অতীব জরুরী যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র আইসিইউ নয় অপারেশনে থিয়েটারেও অনেক যন্ত্রপাতি জরুরি প্রয়োজনে কেনা হয়েছে রোগীদের অপারেশন সেবা বৃদ্ধি এবং তা অব্যাহত রাখার জন্য।
সম্প্রতি অপারেশণ থিয়েটার অত্যাবশ্যক একাধিক যন্ত্র (ডায়াথার্মি ও মনিটর) অকেজো হয়ে পড়ায় অপারেশন সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছিলো। একই সাথে বেডের তুলনায় মনিটর কমে যাওয়ার কারনে আইসিইউ সেবা প্রদান সম্ভব হয়ে উঠছিলো না। তাই আইসিইউ তহবিলে পর্যাপ্ত পরিমান টাকা স্থিতি থাকায় ডাঃ আবু হাসানাত মোঃ আহসান হাবীব ২০লক্ষ টাকা নিয়ে গত ২০ নভেম্বর২৪ইং যন্ত্রপাতিসহ আনুসাঙ্গীক কিছু মালামাল ক্রয়ের লক্ষে ঢাকা’র উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ব্যাগ এ টাকার অস্থিত্ব বোঝা গেলে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হন। টাকার উৎস এবং বহনের উদ্দেশ্য সংক্রান্ত প্রমাণক দাখিলের পর তারা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে তহবিল টি ব্যবহার করার পরামর্শ প্রদান করেন।
ছাড়া পেয়ে ডাঃ আবু হাসানাত মোঃ আহসান হাবীব ঐ দিন যন্ত্রপাতির কোটেশণ নিয়ে অর্ডার নিশ্চিত করে। পরবর্তিতে ব্যাংক একাউন্ট করে যন্ত্রপাতির দাম একাউন্ট ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধ করে। যা এখনো চলমান আছে।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, আইসিইউ ইনচার্জ ডাক্তার রবিউল ইসলাম তুহিন, এ সময় উপস্থিত ছিলিন মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার শরিফুল আলম খান,
অর্থপেডিক্স বিভাগের ডাক্তার জহিরুল ইসলাম, যশোর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ডাক্তার ওয়াহেদুজ্জামান আজাদ, অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডাক্তার বাপ্পি এসময় স্থানীয় ও জাতীয় এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply