অভিযোগ ও স্কুল সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে বিগত ২০১৭ সালে ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে তার শ্রেনী কক্ষে একা পেয়ে তৎকালীন সহকারী ও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক দরজা দিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করে। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হলে উক্ত শিক্ষক দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে কেশবপুর উপজেলা শিশু কল্যাণ স্কুলে বদলী করা হয়। সে সময় ঢাকা শিশু কল্যাণ ট্রাষ্টে তদ্বীর করে ৮ মাস পরে উক্ত শিক্ষক আবার যশোরে ফিরে আসেন।
সে সময় তার বিরুদ্ধে তদন্তে বলা হয়, উক্ত শিক্ষক ৪র্থ শ্রেনীর ১৪ থেকে ১৫ বছরের শিক্ষার্থীদের স্পর্শকাতরস্থানে হাত দিতো। সে সময় তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা ও প্রথামিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রশাসক যশোরের মাধ্যমে ঢাকায় প্রেরনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু উভয় অফিসে আর্থিক তদবীরের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগে প্রকাশ।
এছাড়া, বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার মান ও ব্যবস্থাপনা ভালো না । ২জন মহিলা শিক্ষক শ্রেনী কক্ষে পাঠদানকালে অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে পড়েন বলে শিক্ষার্থীরা তাদের মা বাবার কাছে অভিযোগ করেছেন। শুধু ঘুমানো নয় তারা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিভিন্ন জিনিস কেনায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানলেও তার দূর্বলতার মহিলা শিক্ষকদের সাথে সম্পর্ক দূরত্ব হওয়ার কারনে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন না।
সূত্রগুলো দাবি করেছেন, পাঠদানকালে ও পূর্বে মহিলা দুই শিক্ষক ঘুমানোর সুযোগে বিদ্যালয়ে পাঠদান নিতে আসা শিক্ষার্থীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এ কারনে বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, কারিগরি শাখায় শুধু মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে সামান্য কিছু শিক্ষার্থী আছে।
সূত্রটি দাবি করে,ঢাকা থেকে ভিডিও কলে বিদ্যালয় পরির্দশন করার কথা বললে উক্ত বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অন্য শ্রেনীর পাঠদানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেখান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেও তিনি স্কুল শুরুর অনেক পরে বিদ্যালয়ে আসেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষকের কোন অভিজ্ঞতা নেই। তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে মিথ্যা কথা বলেন। স্কুলের আঙ্গিনা নোংরায় অপরিষ্কার অবস্থায় থাকে। তাছাড়া, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি আদায় করে প্রধান শিক্ষক তার দলের একজনকে ভাগ দিয়ে নিজের পকেট ভারী করেন বলে জানা যায়।
সূত্রগুলো আরো জানিয়েছে, বিদ্যালয়ের সামনে তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের আমলে কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০টি দোকান ঘন নির্মাণ করেন। যা থেকে প্রতিমাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা স্কুলের উন্নয়নের জন্য হওয়া স্কুলের তহবিলে জমা হয়। কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল স্কুলের দোকান থেকে অর্জিত অর্থ জেলা প্রশাসক যশোর কর্তৃক পরিচালিত অগ্রনী ব্যাংক পিএলসি যশোর শাখায় জমা দেওয়া এবং উক্ত অর্থ কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে স্কুল পরিচালনায় অনুসাঙ্গিক খাতে ব্যয় করা যাবে।
অথচ বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল হক সকল নিয়ম কানুনকে উপেক্ষা করে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য বিগত ২০২২ ও ২০২৩ পর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজার টাকা হারে ৩লাখ টাকা এবং চলতি বছরে ৬ মাসে ৭৫ হাজার টাকা সর্বমোট ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিজ তহবিলে গচ্ছিত রেখেছেন।এমনটি তিনি উক্ত অর্থ দিয়ে ১টি মোটর সাইকেল কিনেছেন।
সূত্রগুলো জানান, কিছুদিন পূর্বে এ ঘটনার জন্য যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিদ্যালয়ের ফান্ডের অর্থের হিসাব চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বীকার করেন উক্ত অর্থ তার নিজ তহবিলে গচ্ছিত আছে। এ নিয়ে শিক্ষক ইমদাদুল হককে তিরস্কার করেন। উক্ত বিদ্যালয়ের আওতাধীন সামনে নির্মিত দোকান ঘরের ভাড়াটিয়াদের সাথে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে। কারন বিদ্যালয়ের মার্কেটের কিছু কাজ এখনও অসম্পূর্ন রয়ে গেছে। যা মেরামত করার কথা তা এখনও করেননি।
যার কারনে দোকানের ভাড়াটিয়া নির্দিষ্টহারে মাসিক ভাড়া প্রদান বন্ধ করে রেখেছেন। অবিলম্বে এ ধরনের অযোগ্য শিক্ষককে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছেন,অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে উক্ত বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি না থাকায় তার বক্তব্য দেওয়া যায়নি এমনকি তাকে তার ব্যবহৃত ফোনেও পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply