একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন চেয়েছিল ৭৬টি দল, পায়নি একটিও।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নাকফুল, ইত্যাদি পার্টি, মুসকিল লীগসহ হরেক নামের ৮০টি নতুন দলের আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে।
নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে চার মাসের আবেদনের সময়সীমার শেষ দিন ছিল রোববার।
কমিশনের জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, নির্ধারিত সময়ে ৮০টি দলের আবেদন পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিবন্ধন যাচাই-বাছাই কমিটি প্রাথমিকভাবে আবেদনগুলো দেখবে। তারপর তা ইসির বিবেচনার জন্যে উপস্থাপন করা হবে।
শর্ত পূরণ করছে কিনা তা পরীক্ষা করতে নিবন্ধনযোগ্য দলগুলোর দলিলাদি মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে।
আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নতুন দলের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করার কথা রয়েছে।
সংসদ নির্বাচনে দলীয় পরিচয়ে অংশ নিতে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। বর্তমানে ৩৯টি দল নিবন্ধিত রয়েছে। দলীয় প্রার্থীর বাইরে অন্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়। নতুন কোনো দলকে নিবন্ধন পেতে হলে শেষ শর্তটিই পূরণ করতে হয়।
এই শর্তে আবেদনকারী দলের একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ (২১টি) প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মহানগর থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকতে হবে।
২০০৮ সালে প্রথম নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১২৬টি দল আবেদন করলে ৩৯টি দল শর্ত পূরণ করেছে সাপেক্ষে নিবন্ধন পায়।
এর পরে দশম সংসদে ৪৩টি দলের আবেদন এলে আরও তিনটি দল ২০১৩ সালে নিবন্ধন পায়।
সবশেষ একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল আবেদন করলেও নিবন্ধনের যোগ্য একটিও বিবেচিত হয়নি। অবশ্য আদালতে গিয়ে ২০১৯ সালে দুটি দল আদেশ নিয়ে এলে যুক্ত হয়।এছাড়া ওই সময় নিবন্ধন না পাওয়া আলোচনায় থাকা নাগরিক ঐক্যের আবেদন এবারও পড়েছে। একই সময় গণসংহতি আন্দোলন আবেদন করলেও সেটি এখন আদালতের বিবেচনাধীন।
সব মিলিয়ে ৪৪টি দল নিবন্ধন পেলেও ফ্রিডম পার্টি, জামায়াতে ইসলাম, জাগপা, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপি- এই পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যায়।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন কারণে আলোচনায় থাকা গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি নিবন্ধনের জন্য যেমন আবেদন করেছে, তেমনি নাকফুল, ইত্যাদি পার্টি, মুসকিল লীগ- এর মতো নামের পার্টির নামও রয়েছে তালিকায়।
দলগুলো হচ্ছে নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টি, মুসকিল লীগ, নতুন বাংলা, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন (বিজিএমএ), বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পাটি (কেএসপি), বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট (পিডিএ), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বৈরাবরী পার্টি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও ননপ্রবাসী কল্যাণ দল, বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ আম-জনতা পার্টি,
বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট (বিডিএম), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, এবি পার্টি, সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন- বিএনএম, বাংলাদেশ এলডিপি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লীগ, গণ রাজনৈতিক জোট গর্জো, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), নতুন ধারা বাংলাদেশ- এনডিবি, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, জাতীয় জনতা পার্টি, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), বাংলাদেশ তৃণমূল লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি), ভাসানী অনুসারী পরিষদ, নাকফুল বাংলাদেশ, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ তৃণমূল কংগ্রেস, মুক্তিযোদ্ধা কমিউনিজম ডেমোক্রেটিক পার্টি, রাজনৈতিক আন্দোলন, বাংলাদেশ জনতার অধিকার পার্টি, বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি- বিএইচপি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএনজিপি), জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি, যুব সেচ্ছাসেবক লীগ, ন্যাপ (ভাসানী), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ (বিজেএল), বাংলাদেশ ইসলামিক গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ মাইনোরিটি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় বঙ্গ লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি), জনতার অধিকার পার্টি (পিআরপি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জনস্বার্থে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, সাধারণ জনতা পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ মানবতাবাদী দল, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি (বিইউআইপি), বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগ, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দল (বিডিপি), মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, গণ অধিকার পার্টি (পিআরপি), বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি) ও যুবসমাজ পার্টি।সূত্রঃ বিডিনিউজ ২৪
Leave a Reply