ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, যা হলে রক্তে গ্লুকোজ থাকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ডায়াবেটিস রোগীদের থাকে ইনসুলিন ঘাটতি।
ডায়াবেটিস তিন রকমের—
♦ টাইপ ১
♦ টাইপ ২
♦ গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য রয়েছে ইনসুলিন, মুখে খাওয়ার ওষুধ, ব্যায়াম আর স্বাস্থ্যকর আহার। একে নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা জটিলতা হয়।স্নায়ু ও চোখের ক্ষতি হয়, কিডনি হতে পারে বিকল। হতে পারে হৃদরোগ ও স্ট্রোকও।
আক্রান্ত ব্যক্তি অন্ধ হয়ে যেতে পারে। পায়ে গ্যাংগ্রিন হয়ে পা কেটে ফেলতে হতে পারে। তবে সময়মতো শনাক্ত হলে আর চিকিৎসা হলে ভয়ের কারণ নেই। স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব।
ডায়াবেটিস থাকলে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা ইনসুলিন থাকলেও তা শরীর ব্যবহার করতে পারে না। আবার দুটি সমস্যা একত্রেও থাকতে পারে।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস
শরীর ইনসুলিন হরমোন তৈরি না করতে পারলে হয় টাইপ ১ ডায়াবেটিস, তখন জীবন বাঁচাতে ইনসুলিন ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকে না।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস
আবার কম পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ হলেও শরীর তা ব্যবহার করতে পারে না। দেহ কোষ সাড়া দেয় না। এমন ধরনের ডায়াবেটিসকে বলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
আরেক ধরনের ডায়াবেটিস হলো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস। গর্ভধারণের দ্বিতীয় বা তৃতীয় মাসে এটি হয়ে থাকে। প্রসবের পর তা অনেক সময় চলে যায়।
প্রি-ডায়াবেটিস
অনেকের রক্তে গ্লুকোজ বেশি কিন্তু ডায়াবেটিস মাত্রায় পৌঁছয় না। একে বলে প্রি-ডায়াবেটিস। এ অবস্থা চিহ্নিত হলে শরীরচর্চা, ডায়েট, জীবনধারা বদলালে, ওজন কমালে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কমে যায় বা হলেও অনেক পরে হয়।
বেশির ভাগ রোগী জটিলতা নিয়ে হাজির হন। হয়তো চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, পা পচতে শুরু করেছে, ক্লান্তি ও দুর্বলতা ভর করেছে, বিষণ্নতা দেখা দিয়েছে, খেলেও ওজন কমছে, ক্ষত শুকাচ্ছে না, সব সময় ক্ষুধা, যৌন দুর্বলতা বা চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। তাই সব সময় ডায়াবেটিস চেক করতে হবে।
রক্তে গ্লুকোজ মান নির্ণয়
প্রথমে অভুক্ত অবস্থায়, এরপর গ্লুকোজ মেশানো শরবত পানের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজ মান পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া রক্তে বিগত তিন মাসের গড় গ্লুকোজ মান পরীক্ষার জন্য এইচবিএওয়ানসি পরীক্ষা করা হয়। এইচবিএওয়ানসি ৫.৭ শতাংশের নিচে থাকা উচিত। অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজ প্রতি লিটারে ৪.২-৬.১ মিলিমোল আর ২ ঘণ্টা পর ৮ মিলিমোলের নিচে থাকলে তা স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়।
লেখক : সাবেক অধ্যক্ষ
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ
Leave a Reply